কিভাবে স্বাস্থ্য ভালো রাখা যায় , স্বাস্থ্য ভালো রাখার প্রয়োজনীয়তা



স্বাস্থ্য রক্ষায় পানির ভূমিকাঃ

ভালো স্বাস্থ্য রক্ষায় পানির গুরুত্ব অপরিসীম । আমাদের শরীরের প্রায় ৬০ অংশ পানি দিয়ে গঠিত, যা বিভিন্ন জৈবিক ক্রিয়া ও শারীরিক ফাংশনের জন্য অপরিহার্য ।

পানি আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, পুষ্টি ও অক্সিজেনের পরিবহন, বর্জ্য পদার্থ বের করে দেওয়া এবং সংযোজক টিস্যু ও জয়েন্টের স্নেহনে সাহায্য করে । 

পানি আমাদের শরীরের মেটাবলিজম বাড়ায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে । এটি খাদ্য হজমের প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে । পানি ডিটক্সিফিকেশনের একটি প্রাকৃতিক উপায়, যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় । এছাড়া, পানি ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখে, ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে এবং বলিরেখা প্রতিরোধ করে ।     

পানির অভাবে শরীরে ডিহাইড্রেশন ঘটে, যা মাথা ব্যথা, ক্লান্তি, মনোযোগের অভাব এবং মেজাজের পরিবর্তন ঘটায় । দীর্ঘমেয়াদী ডিহাইড্রেশন কিডনি স্টোন এবং অন্যান্য কিডনি সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায় । তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত ।     

প্রতিদিনের পানির চাহিদা ব্যক্তি ভেদে ভিন্ন হতে পারে । এটি বয়স, লিঙ্গ, ওজন, আবহাওয়া এবং শারীরিক কার্যকলাপের উপর নির্ভর করে । তবে সাধারণত, পুরুষদের প্রতিদিন প্রায়৩.৭ লিটার( ১২৫ আউন্স) এবং মহিলাদের প্রায়২.৭ লিটার( ৯১ আউন্স) পানি পান করা উচিত ।     

পানি পানের অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য কিছু টিপস হলো  

          ১)  প্রতিবার খাবার খাওয়ার সময় এক গ্লাস পানি পান করুন ।   

          ২) ব্যায়াম বা শারীরিক কার্যকলাপের সময় অতিরিক্ত পানি পান করুন ।  

          ৩) যদি পানির স্বাদ আপনার পছন্দ না হয়, তাহলে লেবু, শসা বা পুদিনা পাতা দিয়ে স্বাদ বাড়াতে পারেন । 

          ৪)  সবসময় সঙ্গে একটি জলের বোতল রাখুন এবং নিয়মিত পানি পান করুন ।  

          ৫)  পানি পানের অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য অ্যাপ বা রিমাইন্ডার ব্যবহার করুন ।     

 পানি পান করার সময় কিছু বিষয় মনে রাখা উচিত - যেমন, খুব বেশি পানি পান করা হাইপোন্যাট্রেমিয়া নামক অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে, যা শরীরের সোডিয়ামের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে কমিয়ে দেয় । তাই পানি পান করার সময় সঠিক ব্যালান্স বজায় রাখা জরুরি । সব মিলিয়ে, পানি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য এবং এর প্রয়োজনীয়তা অসীম । প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করে আমরা আমাদের শরীরকে সুস্থ ও সক্রিয় রাখতে পারি ।     

স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ১০ টি উপায়-   

      ১) সুষম খাদ্যাভ্যাস প্রতিদিনের খাবারে শর্করা, আমিষ, ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ                  করুন ।

      ২) নিয়মিত ব্যায়াম অন্তত সপ্তাহে ৫ দিন, প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা, জগিং বা অন্যান্য ব্যায়াম অনুশীলন                     করুন । 

      ৩) পর্যাপ্ত ঘুম রাতে ৭- ৯ ঘণ্টা নিরবিচ্ছিন্ন ও মানসম্পন্ন ঘুম নিশ্চিত করুন ।   

      ৪) স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট ধ্যান, যোগ অনুশীলন, ও শখের কাজে অংশ নিয়ে মানসিক চাপ কমান ।

      ৫) পানি পান প্রতিদিন অন্তত ৮- ১০ গ্লাস পানি পান করুন ।

      ৬) নির্মল পরিবেশে থাকা ধোঁয়া, দূষণ ও আবর্জনা মুক্ত পরিবেশ বজায় রাখুন ।

      ৭)  বিশ্রাম ও উপশম কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম নিন ও স্ট্রেচিং করুন ।

      ৮) সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখা বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত আন্তরিক সম্পর্ক বজায় রাখুন ।

      ৯) ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার ধূমপান ও মদ্যপান থেকে দূরে থাকুন ।

     ১০) নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা প্রতিবছর নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করান এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন ।    

স্বাস্থ্য ভালো রাখার প্রয়োজনীয়তা-  

স্বাস্থ্য ভালো রাখা মানে শুধু রোগ- ব্যাধি থেকে মুক্ত থাকা নয়, এর অর্থ হলো পূর্ণাঙ্গ শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক ভালোবাসার অবস্থা । 

সুস্থ থাকার প্রয়োজনীয়তা নিম্নরূপ -

    ১. দৈনন্দিন কার্যক্ষমতা ভালো স্বাস্থ্য আমাদের দৈনন্দিন কাজে সক্রিয় ও উৎপাদনশীল করে তোলে ।   

    ২. রোগ প্রতিরোধ সুস্থ শরীর বিভিন্ন রোগ এবং ইনফেকশন থেকে রক্ষা করে ।   

    ৩. দীর্ঘায়ু স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন আয়ু বৃদ্ধি করে ।  

    ৪. মানসিক স্বাস্থ্য ভালো স্বাস্থ্য মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং ডিপ্রেশন কমায় ।   

    ৫.সামাজিক সম্পর্ক সুস্থ থাকলে আমরা আমাদের সামাজিক জীবনে আরও সক্রিয় ও প্রাণবন্ত থাকতে পারি ।        আর্থিক সাশ্রয় স্বাস্থ্য ভালো থাকলে চিকিৎসা খরচ কমে যায় ।  

    ৬. শিক্ষা ও কর্মজীবনে সাফল্য সুস্থ থাকলে শিক্ষা ও কর্মজীবনে মনোনিবেশ করা সহজ হয় ।

    ৭. জীবনের মান উন্নতি স্বাস্থ্য ভালো থাকলে জীবনের মান উন্নত হয় । 

    ৮. সন্তানের স্বাস্থ্য সুস্থ মা- বাবা সুস্থ সন্তানের জন্ম দেন ।

    ৯. আত্মবিশ্বাস ও আত্মসম্মান স্বাস্থ্য ভালো থাকলে আত্মবিশ্বাস ও আত্মসম্মান বৃদ্ধি পায় । 

    ১০. স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম, মানসিক চাপ কমানো, পানি পান            করা, পরিবেশ সচেতনতা, বিশ্রাম ও উপশম, সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখা, ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার              এবং নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি । 


         বডি বিল্ডিং কি? কেন বডি বিল্ডিং করবেন? কিভাবে বডি বিল্ডিং করবেন?

        

মুখের স্বাস্থ্য ভালো করার উপায়

শরীর সুস্থ রাখতে হলে আমাদের কি কি করতে হবে

শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায়

সুস্থ থাকার ১০টি উপায়

শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায়

শরীর স্বাস্থ্য মোটা হওয়ার উপায়

মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায়

সুস্থ থাকার ৫০ টিপস

Post a Comment

Previous Post Next Post

Ads